প্রকাশিত: ২৪/০৬/২০১৬ ৪:৪১ পিএম

আবদুল আজিজ (বাংলাট্রিবিউন), কক্সবাজার:

সম্প্রতি শেষ হওয়া রোহিঙ্গা শুমারির আওতায় আসেনি কক্সবাজারে বসবাসরত অধিকাংশ রোহিঙ্গা। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত সচ্ছল রোহিঙ্গা পরিবার, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল এবং বনবিভাগের দুর্গম এলাকায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের একটি অংশের কাছে তথ্য নিতে যায়নি শুমারির জন্য গণনাকারী দল। রোহিঙ্গাদের আত্মীয়করণ, শুমারির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে রোহিঙ্গা শুমারি অসম্পূর্ণ থেকে গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোহিঙ্গাদের প্রথমে ‘খানা’ গণনা জরিপ শুরু হয়। পরবর্তীতে ২ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত রোহিঙ্গা শুমারির কাজ করে কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান অফিস। জেলার ৫০টি জোনে ৮৮৭টি দলের ১৭৭৪ জন গণনাকারী জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের শনাক্তকরণের কাজ করেন। এতে জেলায় ৩৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে শনাক্ত করার কথা বলা হলেও ঠিক কতজন রোহিঙ্গা নাগরিক শুমারির আওতায় এসেছে- এর সঠিক তথ্য দিতে পারেনি জেলা পরিসংখ্যান অফিস।

তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ৩৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে শুমারিতে অন্তর্ভুক্ত হলেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা যায়নি মাঠপর্যায়ে কর্মরত জরিপকারীদের দুর্বলতার কারণে। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরে স্থানীয় বসবাসরতদের শনাক্ত করা হলেও ভাড়া বাসায় বসবাসরত স্বচ্ছল ও প্রভাবশালী রোহিঙ্গা পরিবার, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় গণনাকারীরা না যাওয়ার কারণে এসব রোহিঙ্গা পরিবার শনাক্তের বাইরে থেকে গেছে।

২০০৮ সাল থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩৫ হাজার ও টেকনাফের হ্নীলার লেদা ক্যাম্পে ১৭ হাজার অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করে আসছেন। এছাড়াও সব চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা বাস করছেন কক্সবাজার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে। এসব ওয়ার্ডে ১০ হাজার পরিবারে প্রায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছে বলে শুমারিতে তথ্য পাওয়া গেলেও জরিপের আওতায় আসেননি কক্সবাজার সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। শুমারির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জানতে কক্সবাজার জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয় জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুর রহমান বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়।

কক্সবাজার সদর উপজেলার মোট নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ও খানার তথ্য বিষয়ে সদর উপজেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. মুমেন খাঁনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও ওপরের নির্দেশনা ছাড়া তথ্য প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ করেন। পরে রোহিঙ্গা শুমারিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান সহকারী নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনিও একই কথা বলে এড়িয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই অভিযোগ করেছেন, শহরের বড় দালানগুলোতে নানাভাবে রোহিঙ্গা বসবাস করলেও অনেক ভাড়াটিয়া রোহিঙ্গা শুমারিতে অর্ন্তভুক্তকরণ থেকে বাদ পড়েছে। অনেক গণনাকারী শুধুমাত্র দরিদ্র অসহায়দের কাছে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলেও যারা প্রতিষ্ঠিত ও আত্মীয়তার সূত্র ধরে এরই মধ্যে এদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন গণনাকারীরা তাদের এড়িয়ে গেছেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ কারণে সরকারের বৃহৎ কার্যক্রম অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থায় শেষ হয়েছে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...